১৩. ব্রেক দ্য সার্কেলঃ মাস্টারবেশন থেকে মুক্তি (৩ কিস্তি)


 ব্রেক দ্য সার্কেলঃ মাস্টারবেশন থেকে মুক্তি (১ম কিস্তি)

শহুরে মুরগীর কুঠির জীবন চাওয়া-পাওয়া ,সাফল্য-ব্যর্থতার সংজ্ঞা পালটে দিয়েছে । কর্ম ব্যস্ত জীবনের চাপে পিষ্ট হয়ে আমাদের হাসফাস অবস্থা । ভোগবাদী সমাজ সুকুমার বৃত্তি গুলো  ধ্বংস করে দিচ্ছে । নগ্নতা, অশ্লীলতা, অনাচারকে সাদরে বরণ করে নেওয়ার জন্য  ড্রয়িংরুমে হাজার হাজার টাকা দিয়ে কেনা “বোকা বাক্সটা”তো সাজিয়েই রেখেছিই । এরকম এক ভয়াবহ অস্থির  সমাজে তরুণরা যে নানা বদ অভ্যাসে অভ্যস্ত হয়ে যাবে সেটাই স্বাভাবিক । আমাদের তরুণরা যত রকম বদ অভ্যাসে অভ্যস্ত হয়ে গেছে তার মধ্যে বেশ ভয়াবহ একটা হল হস্তমৈথুন  ।
তরুণদের ছি ছি করে লাভ নেই, গাধার সামনে মুলো ঝুলোলে  এরকমই হয় । অনেক তরুণ আছে যারা এই    থেকে বের হয়ে আসতে চায় । কিন্তু “ভালবাসার  মোড়কে কাম বেচা” এই সমাজে সেটা প্রায় অসম্ভব । আবার এই পঁচে যাওয়া সমাজটাও তো পরিবর্তিত হচ্ছেনা। তাহলে কীভাবে কি ? সারা জীবনই কি তরুণেরা হস্তমৈথুনের দুষ্টচক্রের মধ্যে বন্দী হয়েই থাকবে? মাথা কুটে কুটে দিন পার করবে?
অসম্ভবকে সম্ভব করাই মানুষের কাজ । চলুন দেখি কীভাবে বের হয়ে আসবেন এই ভয়ঙ্কর দুষ্টচক্র থেকে

১) প্রথমেই উপলব্ধি করুন এটা আপনার জন্য ভাল না ।
আপনি কি  এর ক্ষতিকর দিকগুলো সম্পর্কে জানেন –
  •  হস্তমৈথুন   আপনাকে দীর্ঘ মেয়াদী বিষন্নতায় ভোগাবে
  • আপনাকে ভাবতে শেখাবে শুধুমাত্র এটাই আপনাকে সুখ দিতে পারে
  • দাম্পত্য জীবনে আপনি ভয়াবহ রকমের ব্যর্থ হবেন
  • এটা করার পর আপনার নিজেরই নিজেকে ঘৃণা করতে ইচ্ছা করবে । নিজের কাছে নিজেকেই দোষী দোষী বলে মনে হবে । আপনার স্বাভাবিক জীবন যাত্রায় ব্যাঘাত ঘটবে।
  • হস্তমোইথুন একপর্যায়ে আপনার প্রজনন ক্ষমতা নষ্ট করে দিতে পারে ।
এছাড়াও অতিরিক্ত হস্তমৈথুন করলে  আপনি যে সমস্যাগুলোর সম্মুখীন হবেন
  •  পিঠ এবং পিঠের নিম্নাংশে ব্যাথা
  • চুল পড়া
  • অলসতা
  • চোখের দৃষ্টি কমে যাওয়া
  • সবসময় ক্লান্তি অনুভব করা
  • স্মৃতিশক্তি কমে যাওয়া
  • আত্মবিশ্বাস কমে যাওয়া
অতিরিক্ত হস্তমৈথুন  আপনার ইজাকুলেশান টাইমকে কমিয়ে দিবে । এতে আপনার লাইফ পার্টনার অতৃপ্তিতে ভুগবেন, যা অনেক পাপের পথ খুলে দিতে পারে ।
বিস্তারিত পড়ুন চোরাবালি সিরিজে

২) হস্তমৈথুন  যে বেশ ক্ষতিকর এটা আপনি উপলব্ধি করে ফেলেছেন । তারমানে আপনি হস্তমৈথুন   থেকে রিকভারি করার প্রায় ৮০ শতাংশ কাজ করে ফেলেছনে ।   এখন আপনার কাজ হল কেন আপনি হস্তমৈথুন   করেন এই বিষয়টা বের করে ফেলা । আপনার প্রাত্যাহিক রুটিনের চুলচেরা বিশ্লেষণ করে ফেলুন; কি কি বিষয়সমূহ আপনাকে হস্তমৈথুন  করতে বাধ্য করছে ।
আপনি কি
  • প্রাত্যাহিক রুটিনে আপনি বিরক্ত হয়ে গেছেন ?
  • অধিকাংশ সময়ই একা থাকেন ?
  • হতাশ?
  •      হতাশা, দুশ্চিন্তা, ক্লান্তি,জীবনের গ্লানি,অবসাদ  দূর করার জন্য হস্তমৈথুন করেন ?
  • আপনার হাতে প্রচুর অবসর সময় এবং আপনার করার কিছুই নেই?
  • নিয়মিত পর্ন মুভি, আইটেম সং দেখেন?
৩) এবার আমরা দেখব কীভাবে হস্তমৈথুন  এর দুষ্টচক্র ভেঙ্গে বের হয়ে আসতে হবে ।
প্রথমত, আপনি  নিজের উপর ভরসা করতে শিখুন । প্রচুর পরিমানে দু’আ করুন আল্লাহ্‌র কাছে । দু’আর শক্তিকে কখনোই অবহেলা করবেন না । অনেক অনেক লোক আল্লাহ্‌র উপর ভরসা করে তাঁর কাছে দু’আ করার মাধ্যমে হস্তমৈথুন   থেকে নিজেকে রক্ষা করতে পেরেছে । কাজেই আপনি দৃঢ় সংকল্পবদ্ধ হন, আপনি হস্তমৈথুন করা ছাড়তে চান এবং আপনি অবশই সেটা পারবেন।
আপনার অভ্যাসগুলো পরিবর্তন করার চেষ্টা করুন । কোন বিষয়ে আগ্রহ থাকলে (ফটোগ্রাফি, সাইক্লিং) সেটা নিয়ে লেগে থাকার চেষ্টা করুন । হবি গ্রোআপ করার চেষ্টা করুন । ভালো, দ্বীনি ফ্রেন্ড সার্কেলের সংস্পর্শে থাকার চেষ্টা করুন ।
সবসময় মনে রাখবেন, আপনি  অবশ্যই হস্তমৈথুন করা পুরোপুরি ছেড়ে দিতে পারবেন । এবং হস্তমৈথুনের   বিরুদ্ধে এই যুদ্ধে আপনি একা নন ।
এছাড়াও যা করতে পারেন
  • জীবন কে উপভোগ করতে শিখুন
  • আপনার প্রাত্যাহিক জীবনকে যতবেশি সম্ভব কর্মব্যস্ত করে তুলুন
  • রোজা রাখতে পারেন । এটা আপনার অতিরিক্ত এনার্জি শুষে নিয়ে আপনাকে হস্তমৈথুনের হাত থেকে রক্ষা করতে পারবে (সপ্তাহে অন্তত একদিন রোজা রাখার চেষ্টা করুন । সোমবার অথবা বৃহস্পতিবার । রাসূল (সাঃ) বলেছেন,যার বিয়ে করার সামর্থ্য আছে সে যেন বিয়ে করে নেয় । আর বিয়ে করার সামর্থ্য না থাকলে সে যেন রোজা রাখে।)
আপনি যদি কতগুলো অভ্যাস বদলাতে পারেন তাহলে ইনশা আল্লাহ্‌ অবশ্যই  হস্তমৈথুন করা ছাড়তে পারবেন ।
  • সালাত আদায় করার চেষ্টা করুন। নিশ্চয়ই সালাত মানুষকে অশ্লীল ও খারাপ কাজ থেকে বিরত রাখে।
  • পর্ন মুভি দেখা বন্ধ করুন  । কম্পিউটার এমন যায়গায় রাখুন  যেখানের বসে কিছু দেখলে সবাই আপনাকে দেখতে পাবে ।
  • চোখের হেফাজত করুন। (এটা খুব খুব জরুরি)  বিভিন্ন পত্রিকার বিনোদন পেইজ, ক্রোড়পত্র পড়া থেকে  বিরত থাকুন । মিউজিক ভিডিও, ভারতীয় অশ্লীল বিনোদন থেকে নিজেকে বাঁচান ।
  • যে সময়টাতে এবং যে যায়গাটাতে আপনার মধ্যে হস্তমৈথুন করার ইচ্ছা জাগ্রত হয় সেই সময় একা একা না থেকে মানুষজনের সংস্পর্শে থাকার চেষ্টা করুন । এবং পারতপক্ষে সেই  যায়গাতে যাওয়া থেকে নিজেকে বিরত রাখুন
  • যদি গোসলখানায় এই ব্যাপারটা মাঝে মাঝেই ঘটে, তাহলে গোসলখানায় যতকম সময় থাকা সম্ভব ততকম সময় থাকুন । গোসলখানায় বিভিন্ন জটিল বিষয় নিয়ে চিন্তা করতে থাকুন । মনে মনে ম্যাথ সল্ভ করতে পারেন । ধাঁধার উত্তর খুজতে পারেন । নিজেকে যত কম সম্ভব তত কম স্পর্শ করুন
  • নিয়মিত এক্সারসাইজ করুন । জগিং করতে পারেন,সাঁতার কাটতে পারেন । বাচ্চাদের সঙ্গে খেলতে পারেন।
একটা বিষয় মাথায় রাখা খুব খুব জরুরী সেটা হল আপনি  প্রথমবারেই  হস্তমৈথুন করা ছেড়ে দিতে পারবেন না । আপনি যদি প্রত্যেকদিন হস্তমৈথুন করেন তাহলে নিজেকে টার্গেট দিন, এখন থেকে আগামী ৩ দিন আমি হস্তমৈথুন করব না । এই টার্গেট পূরন করতে পারলে নতুন টার্গেট ঠিক করুন আমি আগামী ৭ দিন হস্তমৈথুন করব না । এটা পূরন করতে পারলে আবার নতুন টার্গেট ঠিক করুন। আমি আগামী ১৪ দিন মাস্টারব্রেট করব না । এভাবে চালিয়ে যেতে থাকেন । আর হ্যাঁ প্রতিবার টার্গেট পূরন করার পর নিজেকে  পুরষ্কার  দিতে ভুলবেন না । চকোলেট খেতে পছন্দ করেন, তো বেশি বেশি চকোলেট খান । বিরিয়ানীর কথা শুনলেই জিভে জল চলে আসে , তাহলে ঘুরে আসুন বিরিয়ানির দোকান থেকে ।
আর নিজের জন্য প্রচুর পরিমাণ দু’আ করতে থাকুন ।
ইনশা আল্লাহ্‌ আপনি পারবেনই  ।


ব্রেক দ্যা সার্কেলঃ মাস্টারবেশন থেকে মুক্তি (২য় কিস্তি)

 বিসমিল্লাহির রহমানীর রহীম।

হস্তমৈথুন  বর্তমানে  যুবকদের সবচেয়ে বড়  সমস্যায় পরিণত হয়েছে। এই    সমস্যার জন্য  ব্যক্তির থেকে সমাজ বেশি দায়ী । বর্তমান পুঁজিবাদী সমাজ    ‘Late Marriage ‘ কে বেশি গুরুত্ব দেয়ায় এই সমস্যা আরো প্রকট হয়েছে। যখন    হালালের দরজা বন্ধ করে দেয়া হয় তখন স্বাভাবিকভাবেই হারামের দিকেই মানুষ    বেশি ঝুঁকে।

এই সমাজের কারণেই মুসলিম তরুণ সমাজের একটা বিরাট অংশ হস্তমৈথুন নামক একটা Destructive নেশায় আসক্ত ।

এই   নেশা থেকে মুক্তি পাবার উপায়গুলো আমি প্রধানত ১) ইসলামের আলোকে ও ২) বিজ্ঞানের আলোকে আলোচনা করব। অন্যান্য বিষয়ের আলোকেও কিছু আলোচনা করা হবে।

প্রথমে আমাদের জানা উচিত, কেন আমরা হস্তমৈথুন নামক নেশায় বার বার পতিত হই?  BRAIN SCIENCE   আমাদের এই প্রশ্নের উত্তর দিতে সক্ষম।

BRAIN SCIENCE OF MASTURBATION:

“মানুষের Main Sex Organ কোনটি?”এই প্রশ্নের উত্তরে  বেশিরভাগ মানুষই বলবে- “পুরুষাঙ্গ ও স্ত্রীর যৌনাঙ্গ” । এই উত্তরটা ভুল । মানুষের  প্রধান  Sex Organ  হল মানুষের মস্তিষ্ক ।[1]  কারণ  মস্তিষ্কের কিছু    Neurotransmitter মানুষের ‘ Sexual Process ‘ এ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন    করে।

যখন একজন  ব্যক্তি হস্তমৈথুন করতে উদ্যত হয় তখন  সে  “Funnel Of  Sexual   Process”   এর মধ্য দিয়ে যায়। । [2]  হস্তমৈথুন করার জন্য সে যৌন  উত্তেজক  কিছু  দেখে  বা কল্পনা করে। যৌন উত্তেজক কিছু দেখা বা কল্পনা করার  ফলে তার  শরীরে ‘  Testosterone ‘ এর নিঃসরণ বেড়ে যায় । ‘ Testosterone ‘  ব্যক্তিকে   Sexually arouse করে এবং তাকে এই ফানেলে ঢুকিয়ে দেয়।

এরপর   শক্তিশালী কিছু Neurochemicals নিঃসরিত হয় ব্রেইনে। যেমন-Dopamine, Endorphins । এখানে Dopamine হল একধরনের নিউরোট্রান্সমিটার আর এর কারণেই আমরা ‘Sexual Plesure’ অনুভব করি। মূলত Dopamine  এর কারণেই মানুষে  হস্তমৈথুনে নেশাগ্রস্থ হয় ।

ব্যক্তি  যখন ফানেলে প্রবেশ করে  তখন এই কেমিক্যালগুলো ব্রেইনে  নিঃসরিত হয় আর এই  কেমিক্যালগুলোর উদ্দেশ্য হল  ব্যক্তিকে সর্বোচ্চ উত্তেজনার  অবস্থায়  পৌঁছানো অর্থাৎ Orgasm । এই  কেমিক্যালগুলো খুবই পাওয়ারফুল আর এই  কারণেই  যখন ব্যক্তি ফানেলের গভীরে চলে  যায় তখন সে যেকোন উপায়ে Orgasm করতে  চায়  ,বলা যায় এই কেমিক্যালগুলো  ব্যক্তিকে এই কাজ করতে বাধ্য করে।

উদাহরণ  হিসেবে Dopamine এর কথা বলা  যায় । Dopamine এর অন্যতম কাজ হল  যৌনসংগীর  উপর ব্যক্তির মনোযোগ বৃদ্ধি  করা  ও অন্যান্য বিষয়ের উপর থেকে  মনোযোগ  সরিয়ে নেয়া। অর্থাৎ এটা আপনার  ব্রেনকে যৌক্তিকভাবে অন্যান্য বিষয়  নিয়ে  চিন্তা করতে বাধা দেয় এবং   ব্যক্তিকে Orgasm এ পৌঁছাতে ব্যস্ত রাখে।  আর  এই কারণে যখন কেউ “Funnel Of  Sexual  Process”  এর খুব ভিতরে ঢুকে পড়ে তখন  যুক্তি খুব ধীরে কাজ করে।

এর   ফলে ” এই সব করা ঠিক না ” ” জাহান্নামের আগুনের কথা ” , ”  আল্লাহ্‌  তাআলা  আমাকে দেখছেন ” ইত্যাদি যুক্তিগুলো ব্যক্তির ঈমান অনুযায়ী  কাজ করে।  যদি  কারো ঈমান মজবুত হয় তাহলে সে    “Funnel Of Sexual   Process” এর সর্বোচ্চ জায়গায় পৌঁছানোর ঠিক আগ মুহূর্তে ফিরে আসতে পারবে   ।যদি কোন   সুন্দরী নারী কোন পুরুষ আকর্ষনীয় ভঙ্গিতে আহ্বান করে তাহলে  ”  ‘Testosterone   ‘ এর একটা Boost  নিঃসরণ হবে যা কিনা Dopamine কে triggered  করার  মাধ্যমে  ব্যক্তিকে “Funnel Of Sexual  Process” এর গভীরে ঢুকিয়ে দিবে।

আর  এইজন্যই হয়তো আল্লাহ্‌ তাআলার আরশের নিচে সে ব্যক্তি স্থান  পাবে যাকে  কোন  সুন্দরী নারী ব্যভিচারের জন্য আহবান করে অথচ সে ব্যক্তি তা  অস্বীকার  করে।

কিন্তু যাদের ঈমান দুর্বল তাদের জন্য ফিরে আসা খুব কঠিন । এজন্য অনেক প্রাক্টিসিং মুসলিমও এই বদভ্যাস থেকে সহজে মুক্তি পায় না।

তো  আমরা বুঝতে পারছি যে হস্তমৈথুনের দ্বারা  মূলত ‘ Dopamine Addiction’  হয় । যখন Orgasm হয় তখন   Dopamine brainstorm এর সৃষ্টি হয় যা কিনা হিরোইন খাবার পর ব্রেনে যে ক্রিয়া হয় তার সমতুল্য। [3]

এখন   যারা এই বদভ্যাসে অভ্যস্ত তারা নিশ্চয় বুঝতে পারছেন যে আপনাকে  “Funnel  Of  Sexual  Process” এর মধ্য থেকে ফিরে আসা শিখতে হবে  ও ‘Dopamine  Addiction ‘ ছাড়তে হবে। আর এই দুইটা  সমস্যার সবচাইতে সুন্দর  সমাধান  দিয়েছে ইসলাম।

আমি এখন ইসলামের আলোকে এই নেশা থেকে মুক্তি পাবার কিছু উপায় নিয়ে আলোচনা করব—
১) তাক্বওয়া:
অন্তরে   আল্লাহ্‌ তাআলার ভয় থাকতে হবে। আল্লাহ্‌ তাআলা আমাদের সর্বদা  আমাদের  দেখছেন , তাই যখনই  Sexual Urge অনুভব করবেন তখনই মনে রাখবেন যে  আল্লাহ্‌   তাআলা আপনাকে দেখছেন। তাঁর দৃষ্টিকে এড়িয়ে আপনি কখনোই কোন কাজ  করতে  পারবেন  না। আপনার কাজের জবাবদিহি আল্লাহ্‌ তাআলার কাছে করতে হবে।যদি তিনি অসন্তুষ্ট হন তাহলে আপনার পরিণাম হবে জাহান্নাম । — এই কথাগুলো মাথায় রাখবেন।আর তাক্বওয়া বৃদ্ধি পায় এমন আমল নিয়মিত করতে হবে। তাক্বওয়া আপনাকে সকল প্রকার হারাম থেকে মুক্তি দিতে সক্ষম ।
২) সাওম পালন :
যারা   বিয়ে করতে পারছেন না তাদের জন্য উত্তম হল সাওম পালন করা । কারণ সাওম পালন করলে মানুষের ‘ Will Power ‘ বাড়ে এবং মানুষ নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে শেখে ।আর  এই দুটি গুণ দিয়ে সহজেই একজন তার  Sexual Desire ‘কে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে।
রসূলুল্লাহ্‌ (সঃ ) বলেন —
” হে যুবক সমাজ! তোমাদের মধ্যে যে বিয়ে করার সামর্থ রাখে সে  যেন বিয়ে করে  ।  কেননা বিয়ে দৃষ্টি ও লজ্জাস্থান হিফাযাতের জন্য সবচেয়ে বেশি  সহায়ক ।  আর  যে সামর্থ রাখে না সে যেন সাওম পালন করে,কেননা সাওম যৌন  উত্তেজনা প্রশমনকারী।”[সহীহ মুসলিম]
আর এই কারণে রমাদান মাসে অনেকেই পুরো এক মাসই হস্তমৈথুন করা থেকে বিরত থাকতে পারেন।
৩)নিয়মিত স্বলাত আদায়:
ইসলাম   প্র্যাকটিস করা ছাড়া এই নেশা থেকে মুক্তি পাবার পসিভিলিটি খুবই কম। ইসলাম প্র্যাকটিস করতে হলে অবশ্যই আপনাকে নিয়মিত স্বলাত আদায় করতে হবে। আর স্বলাতের ফাযীলতগুলোর মধ্য একটি হল যে স্বলাত অশ্লীল কাজ থেকে মানুষকে বিরত  রাখে।
মহান আল্লাহ্‌ বলেন–
” নিশ্চয়ই স্বলাত অশ্লীল ও মন্দ কাজ থেকে বিরত রাখে। ” [সূরা আনকাবূত, আয়াত-৪৫ ]
হস্তমৈথুন অবশ্যই একটা Erotic Act তাই নিয়মিত যত্নের সাথে স্বলাত আদায় করলে অবশ্যই আপনি এই অশ্লীল কাজ থেকে বিরত থাকতে সক্ষম হবেন। বিস্তারিত জানার  জন্য আয়াতটির তাফসীর দেখে নিবেন।


৪)দৃষ্টি সংযত রাখা :
এই বিষয়ে অনেকে যুবকই অসচেতন । একটা কথা আপনাকে মনে রাখতে হবে যে  ‘Sincerity’  ছাড়া কখনোই আপনি এই নেশা থেকে মুক্তি পাবেন না। আর   ‘Sincerity ‘ এর পরীক্ষায় আপনাকে  পাশ করতে হলে অবশ্যই যখন আপনাকে আপনার  দৃষ্টিকে সংযত   রাখতে হবে। অনেকে আছে যারা বেগানা নারীর দিকে এক নজরে তাকিয়ে থাকে হোক তা বাস্তবে বা টিভিতে  অথবা কম্পিউটার স্ক্রিনে।
রসূলুল্লাহ্‌ (সঃ ) বলেন–
“চোখের যিনা হল দৃষ্টিপাত করা বা দেখা। “[বুখারী]
কোন   মেয়েকে  একনজরে দেখার পর আপনার প্রধান Sex Organ  ব্রেন, ইনপুট হওয়া   ডাটা এনালাইজ করা শুরু করে ।  যেহেতু আপনি বিপরীত লিঙ্গকে  দেখেছেন  সেহেতু   আপনার শরীরে অল্প হলেও  ‘Testosterone ‘  নিঃসরিত হবে ,  কতটা নিঃসরিত হবে তা নির্ভর করে ডাটার আকর্ষণীয়তার উপর । আর এইভাবেই যদি   আপনি কয়েকজনকে   দেখেন তাহলে আপনার ব্রেইন সেই ইমেজগুলো অল্পসময়ের জন্য হলেও  সেভ করে রাখবে   আর এই ইমেজগুলোই আপনার  অন্তরে লুকিয়ে থাকা কামনাগুলোকে  জাগ্রত করে দিবে এবং আপনার শরীরের সেক্সুয়াল মোড অন করে দিবে যার ফলাফল হতে পারে হস্তমৈথুন।
তাই অশ্লীলমুভি, অশ্লীল অনুষ্ঠান  ও  বেপর্দা নারীদের দিকে দৃষ্টিপাত  করা থেকে আপনাকে বিরত থাকতে হবে নাহলে  হস্তমৈথুন থেকে মুক্তি লাভ  করা আর  আকাশ-কুসুম কল্পনা করা একই কথা হবে।
৫)অবাধ মেলামেশা:
যেখানে   নারীদের দিকে তাকানোই হারাম সেখানে তাদের সাথে প্রেম করা , বন্ধুত্ব করা ,মেলামেশা করার তো প্রশ্নই আসে না। অবাধ মেলামেশাও পুরুষের সেক্সুয়াল মোড অন করে। পুরুষ যখন কোন নারীর সাথে ইন্টারেকশন করে তখনও তার শরীরের   ভিতর  ‘Testosterone ‘  নিঃসৃত হয়  এবং তাকে সেই নারীর সাথে সঙ্গম করার  জন্য   প্রস্তুত করে।[4]
আর  ‘Testosterone ‘  নিঃসরণের লেভেল  যদি  high  হয় তাহলে ব্যক্তি  Orgasm এর প্রয়োজনীয়তা তীব্রভাবে অনুভব করে।  তাই  অবাধ মেলামেশা থেকে আপনাকে বিরত থাকতে হবে।
৬) বন্ধু নির্বাচন :
খারাপ  চরিত্রের বন্ধুদের সাথে মেলামেশা একেবারেই কমিয়ে দিতে হবে। আপনার ৫ জন বন্ধুর মধ্যে যদি ৪ জনই সেক্স এডিক্ট হয় , তাহলে আপনার সেক্স এডিক্ট   হবার সম্ভাবনা খুব বেশি।
রসূলুল্লাহ্‌ (সঃ ) বলেছেন–
“মানুষ তার বন্ধুর স্বভাব-আচরণে প্রভাবিত হয়, সুতরাং  যাকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করবে ,তার ব্যাপারে আগে ভেবে নাও। ” [আবু দাউদ, তিরমিযী]
তাই বন্ধু নির্বাচনে সতর্ক থাকতে হবে। যারা ইসলামের পথে সময় ব্যয় করছে তারাই হতে পারে আপনার উত্তম বন্ধু ।

এছাড়া যা যা করতে পারেন-
শয়তান   আমাদের অশ্লীলতার পথে পরিচালিত করতে চায়।তাই যখনই শয়তান আপনাকে  আহ্বান  করবে হারামের পথে তখনই আপনি দু’আ পড়ে শয়তানের কুমন্ত্রণা   থেকে  আল্লাহ্‌   তাআলার কাছে আশ্রয় চাইবেন। ‘হিসনুল মুসলিম ‘ বইয়ে এই সম্পর্কিত  দু’আ   পাবেন। আপনি ‘ আউযু বিল্লাহি মিনাশ শাইত্বনির রজীম ‘ বলেও আশ্রয়   চাইতে   পারেন।
রাতে ঘুমানোর সময় পুরুষদের   যৌনাঙ্গ  কয়েকবার erect হয়। একে বলা হয়  ‘Nocturnal Penile Tumescence’ ।  এই  erection এর কারণেও অনেকে উত্তেজিত হয়ে  পড়ে এবং হস্তমৈথুন করে। এই  সমস্যা  থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য  রসূলুল্লাহ্‌  (সঃ ) এর সুন্নাহ অনুসরণ  করতে হবে।  যখন আপনি রাতে ঘুমাতে যাবেন তখন অযু করে  ঘুমাতে পারেন,   ঘুমানোর সময় যেসব  দু’আ পড়তে আমাদের বলা হয়েছে সেগুলো পড়তে  পারেন , ডান  কাতে শুতে হবে ,  পেটের উপর শোয়া যাবে না ইত্যাদি।
আপনার রুমে ক্বুর’আনের আয়াত ও হাদীস পোস্টারিং করতে পারেন । এতে  করে   যখন আপনার  Sexual Urge হবে তখন যুক্তি দিয়ে তা সহজে কমাতে পারবেন।
একটা   কথা মনে রাখবেন রাতারাতি আপনি এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাবেন না, আপনাকে    ধৈর্য ধরতে হবে। কখনো ব্যর্থ হলে হতাশ না হয়ে আবার চেষ্টা করতে হবে।
আল্লাহ্‌ তাআলা আমাদের হস্তমৈথুনের ফিতনা থেকে  বিরত থাকার তওফীক দান করুন। আমীন ।
[আগামী কিস্তিতে বিজ্ঞানের আলোকে কিছু পয়েন্ট আলোচনা করা হবে, ইনশা’আল্লাহ্‌ । পড়ার আমন্ত্রণ রইল]

তথ্যসূত্রঃ-
[1] Dr. Laura Berman
[2] Is Masturbation a Healthy Outlet?
[3] THE NEUROCHEMISTRY OF SEX
[4] Desires And Plesures Decoded , Documentry by Discovery Channel

ব্রেক দ্যা সার্কেলঃ মাস্টারবেশন থেকে মুক্তি (শেষ কিস্তি)

হস্তমৈথুন ও Diet Meal Plans: –
কিছু কিছু খাদ্য দ্বারা আমাদের Libido (desire for sexual activity ) নিয়ন্ত্রিত হয় । এই বিষয়ে Cynthia Sass (author of S.A.S.S Yourself Slim) বলেন — “Studies show that certain foods or nutrients do play a role in boosting libido and supporting a healthy sex life.” [1]
যেসব খাবার Libido বাড়ায় তাদের বলা হয় Aphrodisiac Foods বলে। Aphrodisiac Foods মানুষের Libido বাড়াতে সাহায্য করে, এই জন্য একে Foods of Love ও বলা হয় । অপরদিকে Anti-aphrodisiac বা Anaphrodisiac Foods মানুষের Libido কমাতে সাহায্য করে । তাই আপনার ফুড প্ল্যানে যদি Aphrodisiac Foods বেশি থাকে তাহলে আপনার Sexual Urge ঘন ঘন হতে পারে এবং পাওয়ারফুলও হতে পারে। তাই হস্তমৈথুন রোধে আপনাকে একটা ব্যালেন্সড ডায়েট মেনে চলতে হবে যেখানে Aphrodisiac Foods এর পরিমাণ অতিরিক্ত হবে না । Anti-aphrodisiac foods গুলো আমি খেতে বলব না কারণ এইগুলোর খারাপ পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া আছে।তাই এক্ষেত্রে সবচেয়ে ভাল হয় যদি Aphrodisiac Foods খাওয়া কমিয়ে দেয়া হয় ।
আমি কিছু Aphrodisiac Foods এর নাম বলছি ব্যাখ্যাসহ এবং Anti-aphrodisiac এর সম্পর্কেও কিছু তথ্য দিব ।
Aphrodisiac Foods :-
Fruits:-
Watermelon (তরমুজ ) :- তরমুজের একটা টুকরো sweet libido-booster হিসেবে কাজ করতে সক্ষম । Texas A&M Fruit and Vegetable improvement Center এর রিসার্চাররা ২০০৮ সালে এক আর্টিকেলে বলেন যে, তরমুজের কিছু উপাদান আছে যা মানুষের শরীরে Viagra- like effects দিতে সক্ষম।
তরমুজ একধরণের Phytonutrient উপাদান ধারণ করে যার নাম হল Citruline । এই Citruline কে আমাদের শরীর arginine নামক অ্যামিনো এসিডে কনভার্ট করে । আর এই arginine আমাদের শরীরে নাইট্রিক এসিডের লেভেল বাড়ায় যার ফলে আমাদের Blood vessel গুলো relaxed হয় ।আর Viagra মেডিসিনও এই একই পদ্ধতিতে কাজ করে থাকে। তাই যখন এই ফলের সিজন আসবে তখন অবিবাহিতদের জন্য এই ফলটা একটু কম খাওয়াই ভাল হবে।
Mango (আম ) :- Vitamin E এর ভাল প্রাকৃতিক উৎস হল আম । এই Vitamin E কে বলা হয় sex vitamin । এইজন্য আম হল একটা Aphrodisiac Fruit ।
Banana (কলা ) :- কলা হল B-group Vitamin ও পটাশিয়ামের দারুণ উৎস। এই দুটি পুষ্টি উপাদান সেক্স হরমোন প্রোডাকশনে ব্যবহৃত হয় । এছাড়া কলা ‘Bromelain ‘ নামক এনজাইম প্রডুস করে , ধারণা করা হয় এই এনজাইম male libido বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।
Apple (আপেল) :- আপেলে ‘Quercetin’ নামক একধরনের antioxidant থাকে ।’Quercetin’ এর কারণেই একে Aphrodisiac Fruit বলে গণ্য করা হয়। এছাড়া বেরি , কাল-আংগুর , চেরিতেও ‘Quercetin’ থাকে ।
Animal-Based Protein:-
Egg (ডিম) :- ডিম হল হাই প্রোটিনযুক্ত খাদ্য। আর প্রোটিন Aphrodisiac effect বাড়ায় । এছাড়া ডিম হল L-arginine নামক অ্যামিনো এসিডের ভাল উৎস । আর এই L-arginine যৌন রোগ erectile dysfunction এর চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয় । তাই বিবাহিত ভাইয়েরা বেশি বেশি ডিম খান আর অবিবাহিতরা ডিম খাওয়া কমিয়ে দিন ।
Meat (মাংস ) :- বিফ ও চিকেনে Carnitine ও L-arginine নামক অ্যামিনো এসিড থাকে আর থাকে জিংক । Carnitine ও L-arginine রক্তপ্রবাহ ইম্প্রুভ করে এবং সেক্সুয়াল Function এর জন্যও এরা গুরুত্বপূর্ণ । জিংকও সেক্সুয়াল Function এর ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে।
Vegetables:-
Tomato (টমেটো :- Love Apple নামে পরিচিত টমেটোতে প্রচুর ভিটামিন-এ থাকে । আর এই ভিটামিন-এ টেস্টোস্টেরন উৎপাদনে Vital Role পালন করে।
Carrot (গাজর):- গাজরকে ভায়াগ্রার ভেজিটেবিল ভার্সন বলা যায়।কারণ গাজরে ভিটামিন-এ ও ভিটামিন-ই দুইটাই থাকে যা সেক্স হরমোনকে পজিটিভলি ইফেক্ট করে থাকে ।
Chilies (মরিচ ) :- মরিচে থাকা Capsaicin হার্টবিট বাড়ায় এবং endorphin রিলিজ করতে সাহায্য করে যা কিনা Libido বাড়াতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে ।
Others:- Honey (মধু) :- মধুতে প্রচুর ভিটামিন-বি থাকে যা টেস্টোস্টেরন উৎপাদনের জন্য প্রয়োজন হয়।
Garlic (রসুন ) :- রসুনে ‘ Allicin ‘ নামক পদার্থ থাকে । ‘ Allicin ‘ সেক্সুয়াল অর্গানগুলোতে রক্তপ্রবাহ বাড়ায় যা কিনা Libido বৃদ্ধিতে সহায়ক । এছাড়া আরো Aphrodisiac Foods আছে। আমি শুধু যেগুলো সহজলভ্য সেগুলোর নামই উল্লেখ করেছি ।
Anti-Aphrodisiac Foods :-
প্রাচীন যুগ থেকেই Anti-Aphrodisiac এর খোঁজ শুরু হয়ে ছিল । মধ্যযুগে যৌন চাহিদা কমানোর জন্য সাধুরা Chaste Tree এর Berry খেত ।যদিও এখন Anti-Aphrodisiac হিসেবে এটা ব্যবহৃত হয় না। বেশির ভাগ Anti-Aphrodisiac এর ব্যাড ইফেক্টস আছে কিছু ।কারণ কিছু Anti-Aphrodisiac টেস্টোস্টেরনের লেভেল একেবারে কমিয়ে দেয় ।আর টেস্টোস্টেরন পুরুষের দেহ গঠনে ও রিপ্রোডাক্টিভ সিস্টেমে খুব গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে।
Anti-Aphrodisiac Drug এর কাজ হল ভায়াগ্রার বিপরীত যাকে Anti-Viagra বলা হয় । আর এই ড্রাগগুলো সাধারণত জেলে থাকা বন্দীদের দেয়া হয় যাতে বন্দীদের যৌন উত্তেজনা প্রশমিত হয় ।এছাড়া যাদের Over-active Sexual Drive আছে তারাও ডাক্তারের পরামর্শে এই ধরনের ড্রাগ নিয়ে থাকেন।
আমি শুধু দুইটা পয়েন্ট দিব Anti-Aphrodisiac সম্পর্কে –
১) Rice :- ভাত খাওয়ার মাধ্যমে টেস্টোস্টেরনের লেভেল কমানো যায় ।[2] কারণ ভাতে ফ্যাট কম থাকে । আর এর সাইড ইফেক্টসও নেই ।
২) Green and Yellow Vegetables :- সবুজ এবং হলুদ শাক-সবজিও ভাল Anti-Aphrodisiac হিসেবে কাজ করে ।
ডায়েট যেভাবে করবেন :-
Aphrodisiac Food গুলোর বড় লিস্ট দেখে হয়তো অনেকে ভাবছেন যে, “আরে ভাই সব খাবারের নামই তো দিয়ে দিলেন ? তাহলে আমরা খাব টা কি ? ” আসলে আমি Aphrodisiac Food খেতে নিষেধ করি নি। আমি বলতে চাচ্ছি যে আপনার প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় যেন Aphrodisiac Food গুলো কম থাকে। যেমন ধরুন–কেউ সকালে পুরো অর্ধেক একটা তরমুজ খেয়ে নাস্তা করল, দুপুরে চিকেন খেল , বিকালের নাস্তায় কলা ও আম খেল , আবার রাত্রে বিফ ও ডিম খেল! তাহলে এটা হয়ে যাবে Aphrodisiac Based Diet Plan ।তাই আপনাকে যেটা করতে হবে সেটা হল প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় এই ধরনের খাবার কমিয়ে রাখা ,একেরবারেই ছেড়ে দিতে হবে এমন কোন কথা নেই। কারণ Aphrodisiac খাদ্যগুলোর মধ্যে কিছু আছে যা স্বাস্থ্যের জন্য খুব ভাল ।
আর সবচেয়ে ভাল হয় Plant Based Diet করলে । কারণ গবেষণায় দেখা যায় যে , Plant Based Diet মানুষের আত্মনিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা বাড়ায় । তাই শাক-সবজি বেশি খাবেন আর Animal-Based খাদ্য যেমন – বিফ ,চিকেন এগুলো কম খাবেন।
আর আপনি যদি হস্তমৈথুন থেকে একেবারেই মুক্তি পেয়ে যান তাহলে এই ডায়েট Plan স্ট্রিকলি ফলো করার দরকার নেই । যদি আপনি ১ম  ও ২য় কিস্তির  সমাধানগুলোও স্ট্রিকলি মেনে চলেন তাহলে এই ডায়েট Plan আপনার জন্য Optional হবে।
আল্লাহ্‌ আমাদের হস্তমৈথুনের ফিতনা থেকে হিফাজত করুন । আমীন ।
প্রথম দুই কিস্তি পড়ুন এখানে-
প্রথম কিস্তি-http://lostmodesty.blogspot.com/2015/04/blog-post_48.html
দ্বিতীয় কিস্তি http://lostmodesty.blogspot.com/2016/07/blog-post.html
লেখক-  ফরহাদ হোসেইন মিঠু ।  উনি ফরিদপুর মেডিকেল কলেজে অধ্যয়নরত। আল্লাহ ভাইকে উত্তম প্রতিদান দান করুক।
রেফারেন্স :-
[1] Best and Worst Foods for Sex
[2] “Foods That Fight Pain: ” by Dr. Neal Barnard
[3] পুষ্টিবিজ্ঞানের তথ্যগুলো নেয়া হয়েছে বিভিন্ন আর্টিকেল থেকে।

মুক্ত বাতাসের খোঁজে বইটির পিডিএফ গুগল ড্রাইভ থেকে ডাউনলোড করুন